আধুনিক শারীর শিক্ষার ক্ষেত্রসমূহ উল্লেখ কর

৩। আধুনিক শারীর শিক্ষার ক্ষেত্রসমূহ উল্লেখ কর।

আধুনিক শারীর শিক্ষার ক্ষেত্রসমূহ

আধুনিক শারীর শিক্ষার ক্ষেত্র

শারীর শিক্ষা প্রকৃতপক্ষে মানবজীবনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে শিক্ষার চাহিদা পূরণের সোপান মাত্র। এই জন্যই শারীর শিক্ষা সামগ্রিক শিক্ষার একটি বিশেষ অংশ।

আধুনিক শারীর শিক্ষার ক্ষেত্র সমূহ

শারীরশিক্ষার ক্ষেত্রসমূহ হল নিম্নরূপ –

(ক) শিশুকেন্দ্রিক শারীর শিক্ষা :-

প্রতিটি শিশুর চাহিদা ও ব্যক্তিগত বিভিন্নতা যেন প্রাধান্য পায়। সকল শিশুর জন্য শারীরশিক্ষাকে গ্রহণযোগ্য করতে হবে। শিক্ষার্থীর অনুভূতি, চাহিদা, প্রেষণা, লক্ষ্য, সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা-কে প্রাধান্য না দিলে তারা এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

(খ) ব্যক্তি ও সমাজের প্রয়োজনে আত্মনিয়োগ :-

সাধারণ শিক্ষার ধারণা অনুসারে শিক্ষা তথা শারীর শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজের প্রয়োজনে পরিচালিত হবে। তা যেন ব্যক্তি ও সমাজের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য প্রয়োজন মেটাতে পারে। শারীরশিক্ষা কর্মসূচি হবে নমনীয় বা অন্তর্ভুক্তিমূলক। অক্ষম, প্রতিবন্ধী, ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ সকলের জন্য শারীরশিক্ষা কর্মসূচি রচনা করতে হবে, অর্থাৎ সকলকেই এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

(গ) সকলের জন্য শারীর শিক্ষা :-

“সকলের জন্য শারীরশিক্ষা” এই কথাটির অর্থ হল সামাজিক অন্তর্ভুক্তিমূলক শিখন। শারীরশিক্ষাকে বিদ্যালয় গণ্ডির বাইরে বের করে আনা দরকার। শারীরশিক্ষা কর্মসূচি যদি সমাজের সকলের জন্য রচনা না করা যায় তাহলে দেশবাসীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব হবে না।

(ঘ) শিশুর সর্বোচ্চ গ্ৰহণযোগ্য সামাজিক বিকাশ :-

শারীর শিক্ষা যেন শিশুর সর্বোচ্চ গ্রহনযোগ্য সামাজিক বিকাশ সূচিত করে। এর অর্থ হলো –

  • (১) শিশুর শারীরিক, প্রাক্ষোভিক এবং সামাজিক বিকাশের প্রাধান্য দেয়।
  • (২) শিশুর সুষম ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়।
  • (৩) মৌলিক শিক্ষা যা পারে না তা সম্ভব হয় স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষার মাধ্যামে।
  • (৪) মৌলিক শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবেই শারীরশিক্ষা শিশুর সামগ্রিক বিকাশে অংশ নেয়।

(ঙ) ক্রীড়াবিদদের ক্রীড়া দক্ষতার বিকাশ :-

  • (১) প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়াকে শারীরশিক্ষা প্রাধান্য দান করে। প্রতিযোগিতার শিক্ষামূল্য ও বিনোদনমূল্য উপেক্ষা করা যায় না।
  • (২) খেলাধুলাকে শিশুর শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা যায়। যে শিশু খেলে না তার বৃদ্ধি ও বিকাশ অসম্পূর্ণ থাকে, তাই খেলা বাধ্যতামূলক।
  • (৩) দেশের ক্রীড়ার মান উন্নয়ণে ক্রীড়া বিষয়ক গবেষণা সংঘটিত করা শারীরশিক্ষাবিদের দায়িত্ব।
  • (৪) প্রতিযোগিতার কৃত্রিমতা শারীরশিক্ষা গ্রহণ করে না। কারণ, কৃত্রিম প্রতিযোগিতা সামাজিক দূষণ ঘটায়। মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে।

উপসংহার :-

সবশেষে বলা যায় দেশবাসীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য শারীরশিক্ষার কর্মসূচি সমাজের সকলের জন্য রচনা করা প্রয়োজন।

Leave a Comment