যে সকল ছাত্র-ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হতে চলে চলেছ তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হলো ফোর্থ সাবজেক্ট। এই ফোর্থ সাবজেক্ট বিষয়টি আসলে কি এবং এটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কেন রাখা জরুরি? এবং কোন কোন ছাত্র-ছাত্রীদের এই সাবজেক্টে রাখা অত্যন্ত জরুরী? সেই সবকিছু নিয়েই আমাদের আজকের এই প্রতিবেবেদন নিয়ে এসেছি।
ফোর্থ সাবজেক্ট বিষয়টি আসলে কি এবং এটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কেন রাখা জরুরি?
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের সাবজেক্ট নির্বাচন :-
মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধরা বাধা ৭টি বিষয় ছিল সেই ৭টি বিষয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হয়েছে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সময় স্কুল থেকে বাংলা ও ইংরেজি এই দুটি বিষয় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে দেওয়া হয় এবং বাকি ৩ টি সাবজেক্ট শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ মতো নির্বাচন করে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দের সাবজেক্ট বাছাই এর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়ে থাকে। মোট পাঁচটি সাবজেক্ট রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু আরও একটি সাবজেক্ট রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সেটি হল ফোর্থ সাবজেক্ট।
ফোর্থ সাবজেক্ট কী?
একাদশ শ্রেণীতে নিজেদের পছন্দমত ৩ টি সাবজেক্ট নির্বাচন করার পরেও শিক্ষার্থীরা যেটি হলো নিজেদের পছন্দ মতো আরেকটি সাবজেক্ট নির্বাচন করতে পারে। এটিই হল ফোর্থ সাবজেক্ট।
ফোর্থ সাবজেক্ট এর গুরুত্ব
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ফোর্থ সাবজেক্ট এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি সহ যে তিনটি বিষয় নির্বাচন করা হয় তার সঙ্গে ফোর্থ সাবজেক্ট সহ মোট ৬টি বিষয়ে ৬০০ নাম্বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থী যে পাঁচটি পরীক্ষায় বেশি নাম্বার পাবে সেই পাঁচটি সাবজেক্টের নাম্বার দেওয়া হবে এবং যে সাবজেক্টে সবচেয়ে কম নাম্বার পাবে, সেটি ফোর্থ সাবজেক্ট হয়ে যাবে।
ফোর্থ সাবজেক্ট বিষয়ে উদাহরণ
এই বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে ভালোভাবে বোঝানো যেতে পারে। কোনো উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থী যদি বাংলা ও ইংরেজি সহ একাদশ শ্রেণীতে গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন এই তিনটি সাবজেক্ট নির্বাচন করে এবং এর সঙ্গে ফোর্থ সাবজেক্ট হিসেবে জীববিদ্যা নির্বাচন করে থাকে তাহলে সেই শিক্ষার্থীকে এই ৬টি বিষয়েই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হবে। এই ৬টি বিষয়ের মধ্যে যে ৫ টি বিষয়ে বেশি নাম্বার থাকবে সেই পাঁচটি বিষয়ের নাম্বার উচ্চমাধ্যমিক মার্কসিটে ধরা হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী যদি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতে বাংলা ইংরেজি সহ পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং জীব বিদ্যায় বেশি নাম্বার পেয়ে থাকে তাহলে গণিত বিষয়টি ফোর্থ সাবজেক্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ যে বিষয়ে কম নাম্বার থাকবে সেই বিষয়টি ফোর্থ সাবজেক্ট হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী ফোর্থ সাবজেক্ট হিসেবে যে বিষয়ই নির্বাচন করে থাকুক না কেন।
বাংলা ও ইংরেজি কি ফোর্থ সাবজেক্ট করা যায়
অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে বাংলা ও ইংরেজি কি ফোর্থ সাবজেক্ট করা যায়? অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যদি অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর তুলনায় বাংলা ইংরেজিতে কম নাম্বার থাকে বা বাংলা ও ইংরেজির যেকোনো একটিতে ফেল থাকলে সেটা কি ফোর্থ সাবজেক্ট হিসেবে গণ্য হবে এবং শিক্ষার্থীকি পাস করবে? এক্ষেত্রে অবশ্যই জানিয়ে রাখি বাংলা এবং ইংরেজি এই দুটি বিষয়ের মধ্যে যেকোনো একটিতে যদি কোনো শিক্ষার্থী ফেল করে তাহলে সেই শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ ফেল হিসেবে গণ্য করা হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়টি ফোর্থ সাবজেক্ট হিসেবে গণ্য করা হবে না। তাই সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে বাংলা ও ইংরেজিতে যাতে তুলনামূলক বেশি নাম্বার থাকে। কারন এই দুটি বিষয়ে ফেল করলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সম্পূর্ণ ফেল হিসেবে গণ্য করা হবে।
শেষ কথা
বর্তমানে অনেক পরীক্ষার্থী ফোর্থ সাবজেক্ট নির্বাচন করে না। কারণ একটি অতিরিক্ত সাবজেক্ট পড়ার ভয়। আবার এটাও ঠিক যে পছন্দের সাবজেক্ট গুলির কোনো একটি বিষয়ে পরীক্ষা খারাপ হলে নাম্বার কমে যায় তখন ফোর্থ সাবজেক্ট থাকলে হয়তো একটা আলাদা সুযোগ থাকতো। তাই এখনো বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ফোর্থ সাবজেক্ট নির্বাচন করে থাকে।