তিন সামরিক বাহিনীতে ৪০৬
ট্রেনিং দিয়ে আর্মি, নেভি ও এয়ারফোর্সে ৪০৬ জন অফিসার নিয়োগ করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ অবিবাহিত তরুণ-তরুণীরা আবেদন করতে পারেন। ১৫৫তম ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি এবং ১১৭তম ইন্ডিয়ান ন্যাভাল অ্যাকাডেমি কোর্স শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে। প্রার্থী বাছাই করবে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি অ্যান্ড ন্যাভাল অ্যাকাডেমি এক্সামিনেশন (১), ২০২৫’-এর মাধ্যমে। পরীক্ষা ১৩ এপ্রিল। প্রথমে ট্রেনিং। সফল হলে চাকরি। পশ্চিমবঙ্গ-এ একাধিক পরীক্ষাকেন্দ্র আছে।
নোটিশ নম্বর
এই পরীক্ষার নোটিশ নম্বর: 3/2025-NDA-I. তারিখ ১১-১২-২০২৪।
শূন্যপদের বিবরণ
ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি মোট ৩৭০টি (আর্মি ২০৮, নেভি ৪২, এয়ারফোর্স ১২০)। এয়ারফোর্সের ক্ষেত্রে নিয়োগ হবে ফ্লাইং (শূন্যপদ ১২টি), গ্রাউন্ড ডিউটি-টেকনিক্যাল (শূন্যপদ ১৮টি) এবং গ্রাউন্ড ডিউটি-নন টেকনিক্যাল (শূন্যপদ ১০টি) শাখায়। আর্মিতে ১০টি, নেভিতে ৬টি এবং এয়ারফোর্সে শাখা প্রতি ২টি করে মোট ৬টি শূন্যপদ মহিলা প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। ন্যাভাল অ্যাকাডেমি (১০+২ ক্যাডেট এন্ট্রি স্কিম) ৩৬টি (৫টি শূন্যপদ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে আর্মি শাখার ক্ষেত্রে যে-কোনও শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পাশ। ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির এয়ারফোর্স ও ন্যাভাল উইং এবং ন্যাভাল অ্যাকাডেমিতে ১০+২ ক্যাডেট এন্ট্রির ক্ষেত্রে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি এবং ম্যাথমেটিক্স নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পাশ। উভয় ক্ষেত্রেই যাঁরা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন বা দিতে চলেছেন তাঁরাও শর্তসাপেক্ষে আবেদন করতে পারবেন।
জন্ম তারিখ
সব ক্ষেত্রেই জন্মতারিখ হতে হবে ২-৭-২০০৬ থেকে ১-৭- ২০০৯-এর মধ্যে।
দৈহিক মাপজোক
আর্মির ক্ষেত্রে উচ্চতা
১৫৭ সেমি (গোর্খাদের ক্ষেত্রে ১৫২ সেমি)।
নেভির ক্ষেত্রে উচ্চতা
পুরুষ
১৫৭ সেমি (গোর্খাদের ক্ষেত্রে ১৫২ সেমি),
মহিলা
১৫২ সেমি (গোর্খাদের ক্ষেত্রে ১৪৭ সেমি)।
এয়ারফোর্সের গ্রাউন্ড ডিউটি শাখার ক্ষেত্রে উচ্চতা
পুরুষ
১৫৭ সেমি (গোর্খাদের ক্ষেত্রে ১৫২ সেমি)।
মহিলা
১৫২ সেমি (গোর্খাদের ক্ষেত্রে ১৪৭ সেমি)।
এয়ারফোর্সের ফ্লাইং শাখার ক্ষেত্রে উচ্চতা
১৬২.৫ সেমি, বসে থাকা অবস্থায় উচ্চতা ৮১.৫-৯৬ সেমি, পায়ের দৈর্ঘ্য ৯৯-১২০ সেমি, থাইয়ের দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ৬৪ সেমি।
ওজন
বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে মানানসই ওজন থাকতে হবে। অন্তত ৫ সেমি ফুলিয়ে বুকের ছাতির ন্যূনতম মাপ হতে হবে ৮২ সেমি।
দৃষ্টিশক্তি
আর্মি ও এয়ারফোর্সের গ্রাউন্ড ডিউটি শাখার ক্ষেত্রে: চশমা ছাড়া উভয় চোখে ৬/৩৬, চশমা সহ ৬/৬ পর্যন্ত সংশোধনযোগ্য। হাইপারমেট্রোপিয়া থাকলে প্লাস ২.৫ ডি এবং মায়োপিয়া থাকলে মাইনাস ২.৫ ডির মধ্যে হতে হবে। অস্টিগম্যাটিজম প্লাস-মাইনাস ২.০ ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে হবে। রং চেনার ক্ষমতা সি পি-টু (গ্রাউন্ড ডিউটি লজিস্টিক্সের ক্ষেত্রে সি পি ৩) মানের হতে হবে। নেভির ক্ষেত্রে: চশমা ছাড়া দুই চোখে ৬/১২, চশমা সহ ৬/৬ পর্যন্ত সংশোধনযোগ্য। হাইপারমেট্রোপিয়া প্লাস ২.০ ডি, মায়োপিয়া মাইনাস ১.০ ডি, অস্টিগম্যাটিজম প্লাস-মাইনাস ১.০ ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে হবে। রং চেনার ক্ষমতা সি পি-ওয়ান মানের হতে হবে। এয়ারফোর্সের ফ্লাইং ব্রাঞ্চের ক্ষেত্রে: চশমা ছাড়া দুই চোখে ৬/৬, ৬/৯, কেবল হাইপারমেট্রোপিয়া থাকলে ৬/৬ পর্যন্ত সংশোধনযোগ্য। হাইপারমেট্রোপিয়া প্লাস ১.৫ ডি, মায়োপিয়া মাইনাস ০.৭৫ ডি, অস্টিগম্যাটিজম প্লাস-মাইনাস ০.৭৫ ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে হবে। রং চেনার ক্ষমতা সি পি-ওয়ান মানের হতে হবে। সব ক্ষেত্রেই লাল ও সবুজ রং চেনার স্বাভাবিক ক্ষমতা, স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি এবং নিখুঁত শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য থাকা দরকার। কোনওরকম দৈহিক ত্রুটি এই কাজের প্রতিকূল।
পরীক্ষা পদ্ধতি
প্রার্থী বাছাই করা হবে লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টেলিজেন্স ও পার্সোন্যালিটি টেস্টের মাধ্যমে। লিখিত পরীক্ষায় অবজেক্টিভ টাইপ প্রশ্ন হবে এই দু’টি বিষয়ে – ম্যাথমেটিক্স (কোড ০১), জেনারেল এবিলিটি টেস্ট (কোড ০২)। ম্যাথমেটিক্সে মোট নম্বর ৩০০। জেনারেল এবিলিটি টেস্ট অংশে নম্বর ৬০০। দু’টি পর্বেরই সময়সীমা আড়াই ঘণ্টা করে। প্রশ্ন হবে অবজেক্টিভ ধরনের। কোড ০১-এ থাকবে অ্যালজেব্রা, ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ডিটারমিন্যান্টস, ট্রিগোনোমেট্রি, অ্যানালিটিক্যাল জিওমেট্রি অব টু অ্যান্ড থ্রি ডাইমেনশনস, ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাস, ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস অ্যান্ড ডিফারেন্সিয়াল ইক্যুয়েশনস, ভেক্টর অ্যালজেব্রা এবং স্ট্যাটিস্টিক্স অ্যান্ড প্রোবাবিলিটি। কোড ০২-এর পার্ট ‘এ’-তে ইংরেজি (২০০ নম্বর) ও পার্ট ‘বি’-এ জেনারেল নলেজের (৪০০ নম্বর) প্রশ্ন থাকবে। জেনারেল নলেজ অংশে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, জেনারেল সায়েন্স, হিস্ট্রি, ফ্রিডম মুভমেন্ট, জিওগ্রাফি ও কারেন্ট ইভেন্ট বিষয়ক প্রশ্ন হবে। সব ক্ষেত্রেই ভুল উত্তরের জন্য নেগেটিভ মার্কিং আছে। পশ্চিমবঙ্গের পরীক্ষাকেন্দ্র কলকাতা ও শিলিগুড়ি।
লিখিত পরীক্ষার পরে হবে ইন্টেলিজেন্স ও পার্সোন্যালিটি টেস্ট। দুই পর্বে পরীক্ষা হবে। প্রথম পর্যায়ে থাকবে অফিসার ইন্টেলিজেন্স রেটিং টেস্ট, পিকচার পারসেপশন ডেসক্রিপশন টেস্ট। দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকবে ইন্টারভিউ, গ্রুপ টেস্টিং অফিসার টাস্ক, সাইকোলজি টেস্ট ও কনফারেন্স। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় সফল হলে তবেই দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য ডাক পাওয়া যাবে।
ট্রেনিং
নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রথমে ৩ বছরের ট্রেনিং দেওয়া হবে। প্রথম আড়াই বছরের ট্রেনিং সবার ক্ষেত্রে একই। সফলরা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এসসি বা বি এসসি (কম্পিউটার) বা বি টেক (এয়ারফোর্স এবং নেভির ক্ষেত্রে) বা বি এ ডিগ্রি পাবেন। এরপর উইং অনুসারে বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হবে যথাক্রমে আর্মির জন্য দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে, নেভির জন্য এঝিমালার ইন্ডিয়ান ন্যাভাল অ্যাকাডেমিতে, এয়ারফোর্সের জন্য হায়দরাবাদের এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমি এবং এয়ারফোর্স (গ্রাউন্ড ডিউটি-নন টেকনিক্যাল)-এর জন্য বেঙ্গালুরুর এয়ারফোর্স টেকনিক্যাল কলেজে। ১০+২ ক্যাডেট এন্ট্রি স্কিমের আওতায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা সফল ভাবে ট্রেনিং শেষে বি টেক ডিগ্রি পাবেন।
স্টাইপেন্ড
পেশাদারি ট্রেনিংয়ের সময় মাসে ৫৬,১০০ টাকা স্টাইপেন্ড পাওয়া যাবে। নিয়োগ হলে শুরুতে বেতনক্রম: ৫৬,১০০-১,৭৭,৫০০ টাকা। সঙ্গে মিলিটারি সার্ভিস পে বাবদ প্রতি মাসে ১৫,৫০০ টাকা-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।
দরখাস্ত বা আবেদন
অনলাইন আবেদন করা যাবে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে: www.upsc online.nic.in অনলাইন দরখাস্ত করা যাবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দু’টি পার্টে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মনে রাখবেন, অনলাইন আবেদনের সময় প্রার্থীর স্ক্যান করা ফটো, সই (উভয়ই জে পি জি ফর্ম্যাটে ২০-৩০০ কেবি সাইজের মধ্যে) এবং বৈধ সচিত্র পরিচয়পত্র (পি ডি এফ ফর্ম্যাটে ২০-৩০০ কেবি সাইজের মধ্যে) আপলোড করতে হবে।
দরখাস্ত বা আবেদন ফি
ফি বাবদ দিতে হবে ১০০ টাকা। ফি জমা দেওয়া যাবে অনলাইন-অফলাইন উভয় ভাবেই। অনলাইনে নেট ব্যাঙ্কিং অথবা ভিসা বা মাস্টার বা রুপে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ফি দেওয়া যাবে। অনলাইনে ফি জমা দিলে ই-রিসিপ্টের এক কপি প্রিন্ট আউট নিয়ে নেবেন। অফলাইনে ফি জমা দিতে হবে পে-ইন-স্লিপের মাধ্যমে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কোনও শাখায়। পে-ইন-স্লিপ ডাউনলোড করে নেবেন উপরোক্ত ওয়েবসাইট থেকে। পার্ট-টু রেজিস্ট্রেশনের সময় পে-ইন স্লিপের প্রিন্ট আউট নেবেন। পে-ইন স্লিপের প্রিন্ট আউট নেওয়ার পরের কাজের দিন ব্যাঙ্কে গিয়ে নগদে ফি জমা দেবেন।
আবেদনের তারিখ
পে-ইন-স্লিপের মাধ্যমে ফি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ ডিসেম্বর। মহিলা, তফসিলি, সেনাকর্মীদের সৈনিক স্কুলে পাঠরত সন্তানদের ফি লাগবে না। অনলাইনে দরখাস্ত সাবমিটের পর পূরণ করা দরখাস্তের এক কপি প্রিন্ট আউট নিয়ে নেবেন। এটি কোথাও পাঠাতে হবে না। নিজের কাছে রাখবেন। পরে কাজে লাগবে। দরখাস্ত সংশোধন করা যাবে ১ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
জরুরী নির্দেশ
খুঁটিনাটি তথ্যের জন্য দেখতে পারেন এই ওয়েবসাইট: www.upsc.gov.in অথবা ফোন করতে পারেন এই নম্বরে: (০১১) ২৩৩৮-১১২৫/৫২৭১, ২৩০৯-৮৫৪৩।